ফেনী-৩ (দাগনভূঞা-সোনাগাজী) আসনের বর্তমান এমপি ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাপা মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর চেয়ে তার স্ত্রীর সম্পদ বেশি।
এছাড়া ফেনী- ১ (পরশুরাম-ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া) আসনের বর্তমান সাংসদ ও এবারের নির্বাচনে জাসদ মনোনীত (মশাল) প্রতীকের প্রার্থী শিরিন আক্তারের ব্যাংকিং দায় ৩৯ লাখ টাকা।
নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া এই দুই এমপি ও প্রার্থীর হলফনামা পর্যালোচনা করে গতকার এতথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফেনী-৩ আসনে মনোনয়ন বৈধ হয়েছে সাত প্রার্থীর। এদের মধ্যে বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের চেয়ে স্ত্রীর সম্পদ বেশি। তার নিজ নামে ৯৫ ভরি সোনা থাকলেও স্ত্রীর নামে রয়েছে ৫০ ভরি। কোনো দায়-দেনা নেই।
মাসুদ চৌধুরীর স্ত্রীর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলে সম্পদ রয়েছে ৯ কোটি ২৮ লাখ ৮ হাজার ৪৭১ টাকার। মাসুদ চৌধুরীর রয়েছে ৮ কোটি ৫৭ লাখ ৬০ হাজার ২৯৯ টাকার সম্পদ।
মাসুদ চৌধুরী বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৪২ লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৩ টাকা। কৃষিখাতে আয় ১৬ হাজার টাকা। বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ভাড়া থেকে আয় ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। আর ব্যাংক ও অন্য খাত থেকে সম্মানী বাবদ আয় দেখিয়েছেন ২৭ লাখ ৬ হাজার ২৬৩ টাকা।
অন্যদিকে শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত থেকে স্ত্রীর বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন তিন লাখ ৪৯ হাজার ৬২৫ টাকা। এছাড়া অন্য খাতে সম্মানী হিসেবে আয় তিন লাখ ৯০ হাজার টাকা।
মাসুদ চৌধুরীর হাতে নগদ রয়েছে ১০ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। বৈদেশিক মুদ্রা চার হাজার ৭১১ ইউএস ডলার। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে এক কোটি ৩৫ লাখ ৪৫ হাজার ১০২ টাকা ও ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার। সোনা ৯৫ ভরি, ছয় লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও ছয় লাখ টাকা মূল্যের আসবাবপত্র। অন্য ৫২ লাখ ২ হাজার ৫২৫ টাকা।
বর্তমানে দুটি গাড়ি রয়েছে। যার মূল্য ৯৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন জাপার এ প্রার্থী।
অন্যদিকে তার স্ত্রীর কাছে নগদ টাকা রয়েছে এক কোটি ২৫ লাখ ৫২ হাজার ৪০০ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ছয় লাখ ৫৮ হাজার ৭১ টাকা। শেয়ার ৩৩ লাখ টাকা। স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৮৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। সোনা রয়েছে ৫০ ভরি। ইলেকট্রনিকস ও আসবাবপত্র এক লাখ ৬০ হাজার টাকার ও অন্য ১০ হাজার টাকা। তার নামে গাড়ি রয়েছে একটি।
স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ২১৮.৫ শতক কৃষিজমি ও ২০৫.৪৩ শতক অকৃষি জমি রয়েছে মাসুদ চৌধুরীর। রাজধানীর বারিধারায় রয়েছে দেড় কোটি টাকা মূল্যের একটি বাড়ি। এছাড়া স্ত্রীর নামে ৩০ শতক কৃষিজমি রয়েছে।
অপরদিকে ফেনী-১ আসনের বর্তমান এমপি ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাসদের প্রার্থী শিরীন আখতারের দুটি ব্যাংকে দায় রয়েছে ৩৯ লাখ ৭৩ হাজার ৯১৮ টাকা।
সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট দাখিল করা হলফনামায় শিরিন আক্তার উল্লেখ করেন, তিনি পেশায় একজন সমাজকর্মী।
কৃষিখাত থেকে তিনি বাৎসরিক আয় করেন ২ লাখ ৮০ হাজার ৫শ টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ব্যাংক আমানত হিসেবে তার জমা আছে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৪ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তির মাঝে নিজের নামে ৫২ লাখ ৯৫ হাজার ৪৬০ টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৩৫ লাখ ৩০ হাজার ৬০৯ টাকা, ২টি গাড়ি।
ব্যাংকিং দায়ের কলামে তিনি উল্লেখ করেন, উত্তরা ব্যাংক সাত মসজিদ শাখায় ৩০ লাখ ৫৭ হাজার ৯৬১ টাকা ও মধুমতি ব্যাংক শেখ কামাল সরনি শাখায় ৯ লাখ ১৫ হাজার ৯৫৭ টাকা। ইতোপূর্বে এমপি হয়ে তিনি এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করেছেন। ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন এবং এলাকার জনগণ ব্যাপক সচেতন হয়েছে।
টিএইচ